রিয়ার দুঃখ হয় ওর কেন শুধু হাশিমদের সাথেই দেখা হয়। কেন সে কখনো জামশেদদের সখ্য পায় না। তার জীবন কি শুধু নিলীমা আর হাশিমদের জন্য? দু চারজন স্বাভাবিক মানুষের সাথেও তো ওর দেখা হতে পারত। একেবারে যে হয়না তাও তো না। নুরীর মুখ ভেসে আসে। কানে বাজে ওর দিলখোলা হাসি। ও কখনো নুরীকে হিংসা করত না। করার মতো কিছু ছিল না। অন্যের জালের মাছ চুরি করা নুরী, প্রতি ক্লাসে ঠেলে-ঠুলে পাস করা নুরী, ওকে হিংসা করার কিছুই ছিল না। এইচএসসির পরে যখন মারিয়া হাওয়ায় হাওয়ায় ভাসতে শুরু করল, তখন নুরীর কথা ভাবলে করুণা হতো। ওরা কোন অন্ধকারের অতলে পড়ে আছে। অথচ দুনিয়াতে কত কি আছে! এত সুখের হাতছানি, এত আলোর ঝলকানি। সেই সময়গুলোতে নিজেকে নুরীর তুলনায় কত ভাগ্যবতী মনে হতো। নুরীর সামনে গেলে তখন ওর নিজেকেই নিজের ঈর্ষা হতো। আশ্চর্য নুরী আজও তাকে ভালোবাসে। একই রকম ভালোবাসে। ইদানিং বড়বেশি নুরীর মুখ মনে পড়ে। কবে কোথায় কিভাবে যে নুরী সুখের আশ্চর্য প্রদীপ পেয়েছিল, কোনট্রমে যদি সে প্রদীপ একদিনের জন্য মারিয়ার হাতে আসত! একদিনের জন্য, শুধু একদিনের জন্য যদি সে নুরীর মতো অমনি দিলখোলা হাসি হাসতে পারত!
0 Review(s) for এমনি এসে ভেসে যাই(হার্ডকভার)