কোনো একটি শিরোনামকে ব্যাখ্যা করার সবচেয়ে সেরা উপায় হলো, সেই শিরোনামে ব্যবহৃত শব্দগুলোয় ঠিক কোথায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেটি খুঁজে বের করা। যদি 'সেলফিশ' বা স্বার্থপর শব্দটির ওপর জোর দেওয়া হয়, আপনি হয়তো ভাববেন বইটির বিষয়বস্তু স্বার্থপরতা, অথচ, আর যদি কিছু না-ও হয়ে থাকে, এই বইটি পরার্থিতা ( পরার্থবাদ) বিষয় নিয়ে এর আলোচনায় অনেক বেশি সময় নিবেদিত করেছে। শিরোনামে যে-শব্দটিকে সঠিকভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত, সেটি হচ্ছে 'জিন', এবং আমাকে সেই কারণটি ব্যাখ্যা করার সুযোগ দেওয়া হোক। ডারউইনবাদের অভ্যন্তরে কেন্দ্রীয় একটি বিতর্ক মূলত সেই 'একক'কে নিয়ে, যা আসলেই প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় 'নির্বাচিত' হয়। এটি কী ধরনের 'সত্তা', প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরিণতিতে যা টিকে থাকে অথবা টিক থাকতে পারে না। সেই এককটি কমবেশি সংজ্ঞানুযায়ী 'স্বার্থপর' একটি একক হিসেবে রূপান্তরিত হয়। 'আলট্রাইজম' বা পরার্থবাদ হয়তো অন্য কোনো এক স্তরে বিশেষভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হতে পারে। প্রাকৃতিক নির্বাচন কি প্রজাতিদের মধ্যে বাছবিচার করে? যদি তাই হয়, তাহলে আমরা প্রত্যাশা করব একক জীব-সদস্যরা তাদের 'প্রজাতির মঙ্গলের জন্য' পরার্থিতার সাথে আচরণ করবে। জনসংখ্যার অতিবৃদ্ধি ঠেকাতে তারা হয়তো তাদের জন্মহার সীমাবদ্ধ করতে পারে, অথবা প্রজাতির জন্য ভবিষ্যতে শিকার করা যায় এমন প্রাণীদের মজুদ বাড়ানোর লক্ষ্যে তাদের শিকার করার আচরণকে সংযত করতে পারে। বিষয়টি নিয়ে ডারউইনবাদে সর্বব্যাপী বিদ্যমান ভ্রান্তি মূলত আমাকে এই বইটি লিখতে প্ররোচিত করেছিল।
|
0 Review(s) for স্বার্থপর জিন