মাহতাব মিয়া দু্ই ছেলের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। সেই দীর্ঘশ্বাস মিলিয়ে গেল বাতাসে। একটা সময় ছিল মাসেও একদিন এসে এই গ্যারেজটাতে উঁকি দিতেন না। কর্মচারীরা যা কিছু পয়সা বাড়িতে দিয়ে যেতো সেটাই রাখতেন। কিন্তু ফসলের জমিগুলো মেঘনার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর এই গ্যারেজটাই মোটামুটি একটা ভরসার জায়গা। মাহতাব মিয়া ভাবেন ছেলে দুটো কবে বড় হবে, কবে একটা বড় চাকরির সন্ধ্যানে শহরে পাড়ি জমাবে। এত চিন্তা এত হতাশা ভালো লাগে না। তিনি চান একটা দুশ্চিন্তা মুক্ত জীবন। কিন্তু এমন জীবন কী কোথাও আছে? দিন যত যাচ্ছে ততোই যেন হতাশায় ডুবে যাচ্ছে মাহতাব মিয়া। বৃষ্টি থেমে গেলে মাহতাব মিয়া হেঁটে হেঁটে তলিয়ে যাওয়া জমিগুলোর পাশে এসে দাঁড়ালেন। এই জীবনের সাথে কিছুতেই খাপ খাওয়াতে পারছেন না। যতদূর চোখ যাচ্ছে শুধু পানি আর পানি। অথচ এখানে দাঁড়িয়ে দৃষ্টি মেললেই দেখতেন শুধু সবুজ ফসলের সমারোহ, দেখতেন কত স্বপ্ন। সবই তলিয়ে গেছে পানিতে। নদীগর্ভে বিলীন হওয়া জমিগুলো হয়তো বের হবে, কিন্তু বের হলেই এটা নিয়ে শুরু হবে ঝামেলা। যার জমি ছিল এক তুলা, সে এসে পাঁচ তুলা জমি নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে। এখানে জোর যার মুল্লুক তার। দিন যত যাচ্ছে ততই হতাশায় ডুবছে মাহতাব মিয়া। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলে মাহতাব মিয়ার স্ত্রী মিনু বেগম রান্না বসালেন বাইরের একটা চুলাতে। দমকা হাওয়া এসে বারবার চাইছে আগুনটা নিভিয়ে দিতে, কিন্তু পেরে উঠছে না। মাহতাব মিয়া বাজার থেকে এসে দাঁড়ালেন স্ত্রীর পাশে; তার ধৈর্য দেখে মৃদু হাসলেন।একজন মানুষ কতটা ধৈর্য নিয়ে জন্মাতে পারে তা তার স্ত্রীকে না দেখলে কেউ বুঝতেই পারবে না।
Title | সু-প্রভার শুক্রবার (পেপারব্যাক) |
Author | জিহাদ খান,Jihad Khan |
Publisher | বাঙলানামা |
ISBN | |
Edition | 2025 |
Number of Pages | 80 |
Country | Bangladesh |
Language | Bengali, |
0 Review(s) for সু-প্রভার শুক্রবার (পেপারব্যাক)