বিকেলের দিকে হঠাৎ হুড়মুড়িয়ে বৃষ্টি নামল। হৃদি তখন খোলা মাঠে একটা শুকনো খড়ের গাদার ওপর বসেছিল। যতদূর চোখ যায়, কোথাও কেউ নেই। কেবল ধুধু ফসলের মাঠ। মাঠের পাশে নদী। নদীর বুকে শব্দ। সেই শব্দে নুপূরের ছন্দ তুলে নেমে এল বৃষ্টি। হৃদি তটস্থ গলায় বলল, ‘এখন ? এখন কী হবে ?
‘কী হবে ?’
‘এই যে বৃষ্টি চলে এল।
‘তাতে কী ?’
‘আমি এই ভেজা শাড়িতে ফিরব কী করে ?
‘ফিরতে হবে না।’ বলে হৃদির বুকের কাছে এগিয়ে গেল অনিক। তারপর দুহাতে আঁকড়ে ধরল তাকে। বলল, ‘তোমার কাজল ধুয়ে যাচ্ছে।’
হৃদি কথা বলল না। অনিকের এই কথা, এই কণ্ঠস্বর, নদী, মাঠ, বৃষ্টি সবই তার ভালো লাগছে। কিন্তু এখান থেকে ফেরার চিন্তা তাকে আড়ষ্ট করে রাখল। অনিক হঠাৎ তার ঘাড়ের কাছের ভেজা চুলে নাক ডুবিয়ে দিল।
তারপর ফিসফিস করে বলল,
‘বৃষ্টি এলেই তোমার চুলে খানিক ভুলে গন্ধ নেব
তোমার ঠোঁটেই খুঁজব নেশা, নিকোটিনটা বন্ধ দেব
বেহিসেবি হাটবাজারে ছেড়েই দেব দামাদামি
বৃষ্টি এলেই বদলে যাব, আবার হব তোমার আমি।’
হৃদি কথা বলল না। সে টলমল চোখে তাকিয়ে রইল। সূর্য লুকিয়েছে অনেক আগেই। মেঘলা আকাশও যেন আগেভাগেই দিনের যবনিকা টেনে দিচ্ছে। কিন্তু হৃদির চোখে, মুখে, বুকে জ্বলে রইল আশ্চর্য দ্যুতিময় এক আলো!
সন্ধ্যার অন্ধকারের সাধ্য কী সেই আলো নেভায় ?
0 Review(s) for প্রিয়তম অসুখ সে