এমপ্লয়াবিলিটি
400gram
SKU: 0WGSD82
কিছু কথা
আমার এই বইটি মূলত আমার দীর্ঘ ২০ বছরের অভিজ্ঞতার প্রতিফলন। এই দীর্ঘ সময়টিতে কোনো-না কোনোভাবে কর্পোরেট প্রফেশনাল, টিম লিডার, প্রজেক্ট লিডার, প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাজ করতে গিয়ে ছোট বড় দল পরিচালনা করতে হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষকতা, কারিগরি প্রশিক্ষক, মেন্টর হিসেবেও কাজ করতে হয়েছে, এবং এখনও করছি। আবার কাজের সুবাদে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেবার বা দেবার কাজেও অন্তর্ভুক্ত ছিলাম এবং এখনও আছি। তথ্যপ্রযুক্তি দিয়ে শিক্ষা এবং কর্মবাজারে যে বিশাল পরিবর্তন ঘটেছে তাও অবলোকন করার এবং নিজ হাতে অনুশীলন করারও সুযোগ হয়েছে আমার। আমার অভিজ্ঞতার বড় একটি জায়গা জুড়ে আছে তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নের কাজে। আমাদের চারপাশের সবকিছুতেই পরিবর্তন এসেছে। একটা সময় ছিল যখন মনে করা হতো। ভালো রেজাল্ট হয়েছে, এবার চাকরি তো হবেই। হয়তো হতোও তাই। চাকরি পাবার প্রথম ও প্রধান শর্ত ছিল পরীক্ষায় খুব ভালো রেজাল্ট। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে কর্মবাজারের চাহিদারও পরিবর্তন এসেছে। এবার শুধু পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট হলেই চলবে না, এর সাথে যুক্ত হলো মানবিক গুণাবলি। অর্থাৎ কর্মবাজারে নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করতে প্রয়োজন হবে নিজস্ব কিছু গুণাবলির, কিন্তু কেন যেন আমাদের ধ্যান-ধারণায় এখনো আমরা পুরোপুরি হয়তো বিশ্বাস করে উঠতে পারিনি যে সময়ের সাথে সাথে কর্মবাজারে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের বা মূল্যায়নের মাপকাঠিও পরিবর্তীত হয়েছে। আবার এখন বিশ্বের অনেক নামকরা প্রতিষ্ঠানসমূহ আরো একটু ভিন্নভাবে তাদের প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ নিয়োগের পদ্ধতি ঘোষণা করেছে। কয়েক বছর আগের থেকে বলা হচ্ছিল ডিগ্রি নয়, বরং কারিগরি দক্ষতানির্ভর কর্মী তাদের প্রয়োজন। অর্থাৎ নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি বা ভালো রেজাল্ট নয় বরং তারা চাচ্ছেন ওই নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কাজের ক্ষেত্রে তারা ওই কাজে প্রার্থীর যোগ্যতা বা দক্ষতাকেই মূল পরিমাপক হিসেবে ব্যবহার করবেন। ২০২০ সালের শেষের দিকে আবার বিশ্বের বেশ কয়েকটি নামিদামি প্রতিষ্ঠান একত্রে নতুন করে ঘোষণা দিয়েছে তাদের ডিগ্রিও লাগবে না, দক্ষতাও লাগবে না। শুধু ইতিবাচক আচরণ দিয়ে খোলা মনের মানুষ হলেই চলবে। অর্থাৎ উন্নত মানসিকতা চর্চাকারী কর্মীর প্রয়োজন সবাই অনুভব করছেন। বাকিটা তারা শিখিয়ে নেবে। প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের দেশের তরুণরা এই বিষয়টি সম্পর্কে কতটা অবগত? আমরা অনেকেই জানি না কেন পড়াশোনা। করছি বা জীবনের লক্ষ্য কী? আমি কী করতে চাই বা পছন্দ করি বা আমার মূল
দক্ষতা কোন জায়গায়? পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের অন্তর্নিহিত স্থানগুলোকে ফুটিয়ে ভুলতে পারলেই সব অসম্ভবকে সম্ভব করা সহজ। আমরা যদি একটু বিষয়গুলোকে বোঝার চেষ্টা করি, একটু সচেতন হই, কর্মবাজারে যাওয়ার আগে নিজেকে একটু প্রস্তুত করে নেই তা হলে অবশ্যই সফলতা আমার সাথে সাথে চলবে বিনা বাধায়।
আমি আগেই বলেছি দীর্ঘ সময় ধরে আমি কাজ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন সেক্টরের মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছি এবং এখনো করে যাচ্ছি। আমি দেখেছি শুধু এমপ্লয়াবিলিটি বা কর্মদক্ষতার অভাবে হাজার হাজার তরুণ কাজ পাচ্ছে না বা পেলেও ধরে রাখতে পারছে না। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম তরুণদের কাছে গিয়ে তাদের কথা শুনবো এবং বোঝাবার চেষ্টা করব বিশেষ করে জেলা শহরগুলোতে। কিন্তু নিজেকে প্রশ্ন করলাম আমি তরুণদের যদি শুধু আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে বোঝাতে যাই তাহলে তারা মনোযোগ দিয়ে শুনবে না। তাই নিয়োগকর্তাদের কাছে গিয়ে আগে জানার চেষ্টা করলাম তারা কি চান। নিয়োগকর্তাদের চাহিদা এবং আমার ব্যক্তিগত কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতাকে মিলিয়ে বাংলাদেশ ভ্রমণে বের হলাম এবং অধিকাংশ জেলা ঘুরে তরুণদের কথা শুনলাম এবং শোনালাম। বাংলাদেশের তরুণদের সাথে কথা বলে এবং বিশ্বের প্রায় ৩৫টি দেশের তরুণদের কথা শুনে দেখলাম সাধারণ কিছু জ্ঞান ও দক্ষতা এবং এর নিয়মিত অনুশীলনের অভাবে আমাদের তরুণরা পিছিয়ে যাচ্ছে। তারপর ২০১৮ সালে এক বিকেলে সিদ্ধান্ত নিলাম এই বইটি লিখব এবং প্রায় দু'বছর পর ২০২০ সালের মে মাসে বইটি কাঠামো তৈরি হয়ে যায় কিন্তু হঠাৎ মনে হলো এই কাঠামোতে কাজ হবে তো? এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আমি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ২০ জন করে মোট ১০০ জন এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএ বিভাগের প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীর ওপর প্রায় ৭ মাস এই কাঠমোটি নিয়ে "Hand Holding Mentoring (হ্যান্ড হোল্ডিং মেন্টরিং)' এর মাধ্যমে ওই সকল তরুণদের ওপর প্রয়োগ করলাম। ফলাফল হলো যারা একসময় নিজেদের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল তাদের কাছে কাঙ্ক্ষিত কর্মক্ষেত্র খুঁজে পাবার তথ্য আসতে শুরু করল ইমেইল বা সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে। অতএব আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি আমার এই বইটি হাজারো বইয়ের ভিড়ে অন্যতম একটি ক্যারিয়ার উন্নয়ন-বিষয়ক বই যা প্রকাশিত হবার আগেই ১৪০ জনের ওপর প্রয়োগ করে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।
আমার এই বইটিতে আমার জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা এবং আমার নিজের মেন্টরদের পরামর্শ সংবলিত করে গুছিয়ে আপনার সামনে হাজির করার চেষ্টা করেছি। এই বইটিকে আমি ১২টি অধ্যায়ে ভাগ করেছি এবং প্রতিটি অধ্যায়কে আমি একেকটি বইয়ের মতো করে লিখবার চেষ্টা করেছি। সাথে প্রতিটি অধ্যায় শেষে এক বা একাধিক অনুশীলনী যুক্ত করেছি যাতে শুধু পড়ে জ্ঞান অর্জন না করে নিজ হাতে কাজটি করে দক্ষতা নিশ্চিত করা যায়। আমি অনুরোধ করবো পুরো বইটি একবারে পড়বো এভাবে চিন্তা না করে আপনি একটি অধ্যায় করে পড়বেন এবং ব্যক্তিগত গবেষণার মাধ্যমে সেই অধ্যায়টির অনুশীলনী সম্পন্ন করে পরের অধ্যায়টি শুরু করবেন। আমার এই বইটি আপনি ১২ সপ্তাহ ধরে পড়বেন এবং নিচের ছকটির মতো আপনার খাতায় একটি ছক বানিয়ে কোন বিষয়গুলো নতুন করে জানলেন? এবং কোন বিষয়গুলো নিজ হাতে করতে পারছেন? সেটা ছকে উল্লেখ করবেন।
Title | এমপ্লয়াবিলিটি |
Author | কে.এম. হাসান রিপন, K.M. Hasan Ripon |
Publisher | অদম্য প্রকাশ |
ISBN | |
Edition | January - 2022 |
Number of Pages | 230 |
Country | Bangladesh |
Language | Bengali, |
0 Review(s) for এমপ্লয়াবিলিটি