• ০১৯১৪-৯৫০৪২০ (বিকাশ পেমেন্ট)
  • support@mamunbooks.com

বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস কঠোর লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এবং ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা ১৬ ডিসেম্বর অর্জন করি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব। এই বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রের বুকে জায়গা করে নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। যাঁর নেতৃত্বে আমরা

এই দেশের মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্যঃস্বাধীনতাপ্রাপ্ত এ বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমেই যে যে বিষয়গুলোতে বেশি গুরুত্ব দেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে দেশের পররাষ্ট্রনীতি। পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে দেশের অভ্যন্তরীণ নীতিরই সম্প্রসারিত ও সংযোজিত অংশ। রাষ্ট্রের জাতীয় নীতির সে অংশ যা তার বাহ্যিক পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। প্রতিটি রাষ্ট্রই নিজস্ব জাতীয় নীতি লক্ষ্য স্বার্থ বাস্তবায়নে সচেষ্ট হয়। বঙ্গবন্ধু সেই লক্ষ্য ও স্বার্থ বাস্তবায়নে নিজের মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে দেশকে উন্নতি ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যান। এ জন্যই তিনি হচ্ছেন এই স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির আদি স্থপতি। তিনি কোনো পরাশক্তির চোখরাঙানি কিংবা পার্শ্ববর্তী কোনো দেশের সন্তুষ্টি বিধানকে প্রাধান্য দিয়ে পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করেননি। তার পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করার মতো। তিনি পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তিপ্রস্তরকারী হিসেবে যে কথাটি বারবার উচ্চারণ করেন তা হচ্ছে—‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়। অন্য সব স্বার্থের চেয়ে জাতীয় স্বার্থকেই তিনি পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বড় করে দেখেছিলেন। তবে এই জাতীয় স্বার্থ এক একটি দেশের এক এক রকম। যেমন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির ধারা আর সোভিয়েত রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতির ধারা এক নয়। সদ্যঃস্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ধারা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের পররাষ্ট্রনীতির ধারার সাথে মেলেনি। কেননা বঙ্গবন্ধু দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পরপরই উপলব্ধি 

করেন বন্ধুত্ব নিয়েই পৃথিবীতে যায় করতে হবে, বিষেশ দিয়ে নয় এবং এই নীতি যারাই তার পররাষ্ট্রনীতি আবর্তিত হয়েছে। তবে একলা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্ক, পার্শ্ববর্তী বড় দেশের প্রভাব আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। পার্শ্ববর্তী বড় একটি দেশ হচ্ছে ভারত। এ দেশটি মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের মিত্রশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। ফলে পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে ভারত কোনো প্রভাব না ফেললেও তাদের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে কুটিনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে।

১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তিদান করে এবং ৯ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বিমানে তাঁর প্রাণপ্রিয় স্বদেশের পথে রওনা হন। তিনি ১০ জানুয়ারি সকাল ৮-৩০ মিনিটে ভারতের পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। ভারত সরকার কর্তৃক দিল্লিতে আয়োজিত সংবর্ধনা উপলক্ষে পালাম বিমানবন্দরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও প্রেসিডেন্ট ভি.ভি. গিরি তাঁকে উষ্ণ অভিনন্দন জানায়। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভারতের জনগণের প্রতি তাঁর আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানান। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের গভীরতা বঙ্গবন্ধুর এক ঘোষণায় আরো স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ভ্রাতৃত্ব বন্ধন চিরকাল অটুট থাকবে। অপরাহ্ ১-৪২ মিনিটে ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীর 'কমেট' বিমানযোগেই বঙ্গবন্ধু সদ্যঃস্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেসকোর্স ময়দানে পৌঁছে বিশাল জনসমুদ্রে জাতির উদ্দেশে ভাষণ প্রদান করেন। এই ভাষণেই বঙ্গবন্ধুর দেশ পুনর্গঠন ও পররাষ্ট্রনীতির ঘোষণার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

১১ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সেদিনই 'অস্থায়ী আদেশ জারি করেন। স্বাধীন বাংলায় ফিরে এসে এটিই ছিল তার প্রথম ঘোষণা। অপরদিকে ঢাকাস্থ কূটনৈতিক মহলের আভাস ছিল যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে বহুসংখ্যক রাষ্ট্রের স্বীকৃতিদানের সম্ভাবনা আরো উজ্জ্বলতর হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক শিবির এবং ব্রিটেন এবং ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় রাষ্ট্রসমূহ স্বল্প সময়ের মধ্যে স্বীকৃতিদান করবে বলে আশা করা হয়। জার্মান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (পূর্ব জার্মানি) এবং মঙ্গোলিয়া গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে অন্যান্য দেশের স্বীকৃতিদানের ক্ষেত্রে ভূমিকা গ্রহণ করেছে। ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রে বলা হয়েছে যে, বিশ্ব বাংলাদেশ সরকারের কার্যক্রম গভীরভাবে লক্ষ করছে।

Title বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি
Author
Publisher আগামী প্রকাশনী
ISBN
Edition Februyary : 2020
Number of Pages 500
Country Bangladesh
Language Bengali,
ডাঃ মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম, Dr. Mohammod Johurul Islam
ডাঃ মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম, Dr. Mohammod Johurul Islam

Related Products

Best Selling

Review

0 Review(s) for বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি

Subscribe Our Newsletter

 0