সর্বপ্রথম মহান আল্লাহর প্রতি প্রশংসা জ্ঞাপন করছি। যিনি পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীকুলের আরোগ্য দানকারী। এরপর পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও শিক্ষক হয-মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ করছি।
চিকিৎসা মানব শরীর ও আত্মিক বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। যখনই মনুষ্য জাতি রোগ-ব্যাধির সম্মুখীন হয়েছে তখনই চিকিৎসার শরণাপন্ন হয়েছে। তাই আদিম যুগ থেকেই মানবজাতি নিজেদের প্রয়োজনের তাগিদে চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসাবিজ্ঞান বিভিন্ন ভেজষ উপাদান ঝাড়ফুঁক, তাবিজ-কবজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরবর্তীতে তা একটি ক্সবজ্ঞানিক মর্যাদায় শাস্ত্ররূপে উন্নীত লাভ করে।
নবম শতাব্দী ছিল মুসলিম মনীষীগণের চিকিৎসাবিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনের স্বর্ণযুগ। আসমানী গ্রন্থ আল-কুরআনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অনুপ্রেরণায় মুসলমনগণ জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার ন্যায় চিকিৎসাবিজ্ঞানেও অভূতপূর্ব অবদান রাখতে সক্ষম হন।
নবম শতাব্দীতে আব্বাসীয় শাসনামলে বাগদাদকে কেন্দ্র করে মুসলিম বিজ্ঞানীদে চিকিৎসাবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল, যেখানে তারা মানবদেহের গঠন ও বিি রোগ সম্পর্কে গভীর গবেষণা করেন। আব্বাসীয় খলিফাগণের পৃষ্ঠপোষকতায় মুসলিম চিকিৎসাবিজ্ঞানীগণ 'বায়তুল হিক্সা' জ্ঞান গবেষণাগারে হাম, গুটিবসন্ত, বহুমূত্ররোগ, কিডনী, হৃৎপিণ্ড, চক্ষুসহ ক্সদহিক ও আত্মিক বিভিন্ন রোগের নিরাম পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। যা চিকিৎসাবিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনে যুগান্তকারী ভূমিক পালন করে। এছাড়া নবম শতাব্দীতে মুসলিম বিজ্ঞানীগণ চিকিৎসাবিজ্ঞানের ওপ কতিপয় মে.লিক গ্রন্থ রচনা করেন। সেসব গ্রন্থের উদ্ধৃতি ব্যবহার করেই পরবর্তীতে পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানীগণ আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছেন। মুসলিম বিজ্ঞানীগণ চিকিৎসাবিজ্ঞানে বস্তুনিষ্ঠ ও যুক্তিভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে ইতিহাসের পাতায় চির অম্লান হয়ে আছেন। যদিও একসময় জ্ঞান বিজ্ঞানে তাঁদের সকল অবদান পাশ্চাত্যের ষড়যন্ত্রের অতল গহ্বরে তলিয়ে যায়। তবে সেই বিষয়টি এখানে বিবেচ্য নয়। এখানে নবম শতাব্দীতে মুসলিম 'চিকিৎসাবিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান' বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এতে নবম শতাব্দীর উল্লেখযোগ্য মুসলিম বিজ্ঞানীগণ বিশেষ করে যারা চিকিৎসাবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের জীবনী ও চিকিৎসাবিজ্ঞানে তাদের অবদান বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া এতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় তাদের তাৎপর্যপূর্ণ অবদানসমূহও তুলে ধরা হয়েছে। যাতে করে পরবর্তী প্রজন্ম চিকিৎসাবিজ্ঞানে মুসলিম বিজ্ঞানীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান স¤পর্কে জানতে পারে
এবং মুসলমানদের হৃত গে.রব পুনরুদ্ধারে অপরিসীম অবদান রাখতে পারে। চিকিৎসাশাস্ত্রে বিজ্ঞানীগণের অবদানের ওপর বাংলা ভাষায় বিভিন্ন লেখকের বহু সংখ্যক গ্রন্থ প্রণীত হয়েছে। কিন্তু গ্রন্থগুলোর অধিকাংশই তথ্যসূত্র বিহীন এবং সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় রচিত না হওয়ায় গ্রন্থগুলো অপূর্ণাঙ্গ থেকে গেছে। উক্ত বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের পিএইচডি গবেষক ও খাজা ইউনুস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রভাষক, গবেষক, প্রবন্ধকারক ও লেখক গুলশান আকতার গ্রন্থটি প্রণয়নে মনোনিবেশ করেন। এটি রচনায় লেখক আরবি, ইংরেজি, উর্দু ও বাংলায় রচিত মে.লিক গ্রন্থাবলি থেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহপূর্বক সমন্বয় ঘটিয়েছেন। ফলে পাঠকবৃন্দকে একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্যসমৃদ্ধ গ্রন্থ উপহার দিয়েছেন বলে আমরা অভিমত ব্যক্ত করছি। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিষয়টি পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত। বিশেষ করে ইসলামিক স্টাডিজ, আরবি, দর্শন, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মুসলিম বিজ্ঞানীদের জীবনী ও জ্ঞান বিজ্ঞানে তাদের অবদানসমূহ সপর্কে পাঠ প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রথটি বাংলদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার সিলেবাসভুক্ত। বিষয়টি বিবেচনায় এনে গবেষক প্রামাণিক এ গ্রন্থটি রচনার প্রয়াস চালান। আমরা আশা ব্যক্ত করছি গ্রন্থটি দ্বারা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক এবং সর্বস্তরের পাঠকমহল উপকৃত হবেন। গবেষক এমন একটি তথ্যবহুল, সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় গ্রন্থ রচনার জন্য মহান আল্লাহ্র নিকট তার ভবিষ্যৎ জীবনের সফলতা ও উন্নতি কামনা করছি। আমীন।
প্রকাশক
হাওলাদার প্রকাশনী
বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০
| Title | চিকিৎসাবিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান |
| Author | গুলশান আকতার,Gulshan Akhtar |
| Publisher | হাওলাদার প্রকাশনী |
| ISBN | |
| Edition | 1st published. 2025 |
| Number of Pages | 176 |
| Country | Bangladesh |
| Language | Bengali, |
0 Review(s) for চিকিৎসাবিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান